logo
ads
৭ নভেম্বর, ২০২৫

ঐকমত্য কমিশনের ব্যয় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আপ্যায়ন খাতে ৪৫ লাখ

অনলাইন ডেস্ক

ঐকমত্য কমিশনের ব্যয় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আপ্যায়ন খাতে ৪৫ লাখ

16px

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, অতি সম্প্রতি মহলবিশেষের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এই তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও সর্বৈব মিথ্যাচার।

পোস্টে বলা হয়, স্পষ্টতই, যেহেতু এটি একটি পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা, স্বাভাবিকভাবেই অপপ্রচারকারীরা এ বিষয়ে কমিশনের কোনো ভাষ্য সংগ্রহ করেনি। সংশ্লিষ্ট তথ্যের যথার্থতা যাচাইয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেনি।

এতে আরও বলা হয়, অপপ্রচারকারীদের নির্জলা মিথ্যাচারের ফলে জনমনে যেন কোনো ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়—সেই লক্ষ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো যাচ্ছে যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে কার্যক্রম শুরু করার পর ২০২৪–২৫ এবং ২০২৫–২৬ অর্থবছরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বমোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর বিপরীতে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত কমিশনের ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। কমিশনের মোট বরাদ্দের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা।

পোস্টে বলা হয়, কমিশনের এই আপ্যায়ন বরাদ্দের বড় অংশ ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলোচনার সময় এবং কমিশনের অন্যান্য বৈঠকে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিন ধাপের আলোচনাকালে প্রতিদিন কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, তাঁদের সহযোগী, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়।

এতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে ২০২৫ পর্যন্ত কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের ৪৪টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে এই খাতে ব্যয় হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২৩টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। এই বৈঠকগুলো সকাল থেকে রাত অবধি চলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য নাশতা, মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের ব্যবস্থা করতে হয়। গড়ে প্রতিদিন ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম। তৃতীয় পর্যায়ে ৭টি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, এতে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।

পোস্টে বলা হয়, এর বাইরে কমিশনের নিজস্ব সভা হয়েছে ৫০টি, যার অনেকগুলো ছিল ছুটির দিনে এবং দিনব্যাপী; এতে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক, তিনটি সংবাদ সম্মেলনসহ মোট ১৩টি অনুষ্ঠানে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৩৪০ টাকা।

এতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ১৪টি বৈঠকে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা। উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞরা কোনো সম্মানী বা ভাতা গ্রহণ করেননি। এর বাইরে ৯ মাসে অতিথি আপ্যায়নের জন্য ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা, যার আওতায় বিদেশি কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, সম্পাদক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়।

কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওপরের বিস্তারিত হিসাব থেকে স্পষ্ট যে ৮৩ কোটি টাকার ব্যয়ের দাবি কেবল মিথ্যাচারই নয়, বরং জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও তার কার্যক্রমকে হেয় করার একটি সংঘবদ্ধ ও পরিকল্পিত অপচেষ্টা।

কমিশন আশা করে যে অসাধু মহল অসৎ উদ্দেশ্যে এই প্রোপাগান্ডা পরিচালনা করছেন, তারা অবিলম্বে ভুল স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। কমিশন তার মেয়াদকালে দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের সহযোগিতা পেয়েছে এবং আশা করে, সেই ধারা অব্যাহত রেখে গণমাধ্যমসমূহ এই বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা করবে।

 

ads

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ

ads