logo
ads
৩০ জুলাই, ২০২৫

জুলাই কনসার্টের নামে ৭৬ লাখ টাকা চেয়ে ৭০ প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের চিঠি

অনলাইন ডেস্ক

জুলাই কনসার্টের নামে ৭৬ লাখ টাকা চেয়ে ৭০ প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের চিঠি

16px

আগামী ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা এই কনসার্ট। ইতোমধ্যেই রাজশাহী সিটি করপোরেশন তাদের দুই লাখ টাকাও দিয়েছে।বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

 
ফেসবুকে সালাউদ্দিন আম্মার নিজেই স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, অন্তত ৭০টি প্রতিষ্ঠানের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের দেওয়া চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব সুপারিশও করেছেন।
 
অনুদান চেয়ে চিঠি দেওয়া রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ও ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’ নামের একটি দলের পরিচালক কে এস কে হৃদয়।
 
এই ঐতিহাসিক ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি ‘৩৬ জুলাই : মুক্তির উৎসব’। এই উৎসবে রাজশাহীর শহীদ পরিবার, আহতদের পরিবার, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সম্মানিত সমন্বয়কবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হলো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও তরুণ প্রজন্মকে তাদের আত্মত্যাগের গল্প জানানো। এই মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান কামনা করছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে এই আয়োজন আরো সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
 
চিঠিতে বলা হয়েছে, ৩৬ জুলাই ‘মুক্তির উৎসব’ (স্বাধীনতার উৎসব) আয়োজনে আপনার সদয় সমর্থন এবং সহযোগিতা কামনা করছি, যা ৫ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই অনুষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় ৪০ হাজার অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানে জুলাই মাসের তথ্যচিত্র, শহীদ পরিবারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ইন্টারেক্টিভ বিভাগ থাকবে, যা জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের সমৃদ্ধি তুলে ধরে এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যকে উৎসাহিত করে। যেহেতু এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা আয়োজিত একটি অলাভজনক উদ্যোগ, তাই এই অনুষ্ঠানটিকে একটি দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য আমরা বিনীতভাবে আপনার সদয় সহযোগিতা এবং সমর্থন কামনা করছি। এই চিঠির সাথে আপনার সদয় বিবেচনার জন্য বিস্তারিত অনুষ্ঠানের বাজেট এবং কর্মসূচির রূপরেখা সংযুক্ত করা হয়েছে।
 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘বিষয়টি তো চাঁদাবাজির মতোই হয়ে গেল। একটু ঘুরিয়ে ভিন্নভাবে চাঁদাবাজি করা আরকি! একজন ছাত্রনেতা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকে এভাবে চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি করতে পারেন কি না—এ নিয়ে প্রশ্ন তো থেকেই যায়!

 

চিঠিটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, আবার অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা এক পোস্টে লেখেন, এই আয়োজন কারা করছে, সে বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই নিয়ে একটা সিনেমার বিষয়ে সহায়তার জন্য আমরা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে গিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি কোনো সহায়তা করেননি। অথচ এখানে কনসার্ট হবে সেখানে তিনি কিভাবে সহায়তা দেন?

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমাদের দেওয়া রাসিকের চিঠিটি নিয়ে নোংরামি করা হচ্ছে। অথচ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, ওয়ালটন, যমুনা ব্যাংক, সুলতানস ডাইনসহ প্রায় ৭০টি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে আমরা প্রপোজাল দিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারের সুপারিশ নিয়ে, যথাযথ নিয়ম মেনেই প্রপোজাল দেওয়া হয়েছে। আমাদের উপাচার্য স্যার প্রতিটি প্রপোজালে তার সিল, স্বাক্ষর দিয়েছেন। সিটি করপোরেশনে আমরা চিঠি দিয়ে বলেছিলাম আপনাদের পক্ষ থেকে যতটুকু করা যায় আপনারা করবেন। আমাদের ব্যানার হবে ৬৮ থেকে ৭২ পর্যন্ত সব ব্যাচের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজন। এর আগেও রাসিক বিভিন্ন সংগঠনকে অর্থায়ন করেছে। আয়োজনটা যেন না করতে পারি সে জন্য এটা নিয়ে এক পক্ষ নোংরামি শুরু করেছে। আমার পেছনে সব পক্ষ লেগে রয়েছে।

 

অনুষ্ঠানের আরেক আয়োজক কে এস কে হৃদয় বলেন, কোনো একটা প্রগ্রাম অর্গানাইজ করার সময় বিভিন্ন কম্পানির কাছে স্পন্সরের প্রপোজাল দেওয়ার রীতি নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে। স্পন্সর নেওয়া যদি চাঁদাবাজি হয়, তাহলে আমি বলব যুগ যুগ ধরে এই চাঁদাবাজি চলতেছে। সিটি করপোরেশন শুধু আমাদের না, সব ভালো কাজেই স্পন্সর করে। কিছুদিন আগে একটা সংগঠনের বইমেলায় স্পন্সর করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের কনফারেন্সে করছে। তাই আমাদের প্রগ্রামের জন্য এটা ব্যতিক্রম কিছু নয়। তা ছাড়া প্রত্যেক কম্পানির কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে সেই জায়গা থেকে তারা সামাজিক কাজগুলোতে অনুদান দেয়। 

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি প্রথমেই বলে দিয়েছি এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো অর্থ সহায়তা করতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ তোমাদের উদ্যোগে করতে হবে। তখন সে আমায় বলে অর্থ বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করে দিতে। আমি ক্যাম্পাসের অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য এর আগেও সুপারিশ করেছি। এটাও সে রকমই একটি ছিল 

 
 
ads

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ

ads